ফেসবুক অ্যাড সেট করার আগে জেনে নিন অ্যাড পলিসি / গাইড লাইন সম্পর্কে

 ফেসবুক অ্যাড সেট করার আগে জেনে নিন অ্যাড পলিসি / গাইড লাইন সম্পর্কে না জেনে অ্যাড সেট করলে সেটা আপনার অ্যাড অ্যাকাউন্ট অথবা পেজের জন্য ক্ষতির কারন হতে পারে।

ফেসবুক অ্যাড পলিসি


আপনি হয়ত কোন কিছু না ভেবেই হুট করে আপনার বিজনেস পেজে একটা অ্যাড সেট করে দিলেন প্রথমে অ্যাড টা ভালই চললো কিন্তু কয়েক দিন পর খেয়াল করলেন যে আপনার অ্যাড আর আগের মত কাজ করতেছে না। অনেক খোজাখুজি করে দেখলেন আপনার অ্যাড অ্যাকাউন্ট টি ডিজেবল/রেসট্রিক্টশন করে দেওয়া হয়েছে।
অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আপনি হয়ত জানতেই পারেন নি আপনার অ্যাড অ্যাকাউন্ট ডিজেবল/রিসট্রিকশন হওয়ার কারন।
চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক ঠিক কি কারনে আপনার অ্যাকাউন্ট টি ডিজেবল হয়ে যেতে পারে তার কারন গুলো সম্পর্কে –
আপনি যখন জেনে বুঝে অথবা না জেনেই ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড বা কমিউনিটি গাইডলাইন ব্রেক করেন ফেসবুক তখন আপনার অ্যাড অ্যাকাউন্ট টি ডিজেবল বা রেসট্রিক্ট করে দেয়।
ফেসবুকের পলিসির মধ্যে অনেক কিছু আছে। কিছু বিষয় আছে বুঝা অনেক কঠিন। আপনার বুঝতে অনেক কষ্ট হতে পারে । আবার অনেক সময় ঠিক কি কারণে আপনার অ্যাকাউন্টটি ডিজেবল বা রেসট্রিক্ট করা হয়েছে সেটা তারা স্পষ্টভাবে জানাবে না তেমনি ভাবে আপনিও বুঝতে পারবেন না।
এরকম ও হতে পারে আপনার অ্যাড অ্যাকাউন্টটি কিছু দিন হল ব্যবহার করছেন না, কিন্তু হঠাৎ করেই দেখলেন আপনার অ্যাকাউন্ট ডিজেবল বা রেসট্রিক্ট করা হয়েছে।
বিভিন্ন কারণে ফেসবুক অ্যাড অ্যাকাউন্ট ডিজেবল বা রেসট্রিক্ট করে দেয়। ফেসবুকের যেসব কমিউনিটি গাইডলাইন আছে চলুন সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক।

সাধারণ কিছু কারণ -

  • সন্দেহজনক পেমেন্ট মেথড বার বার ব্যবহার করার চেষ্টা করলে।
  • ফেসবুক যদি মনে করে তাদের সিকিউরিটি বিঘ্নিত হচ্ছে তা হলে।
  • অ্যাড অ্যাকাউন্টটি অস্বাভাবিকভাবে ব্যবহার করলে।
  • নতুন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরি করেই অ্যাড দিলে।
  • বিভিন্ন ক্যাম্পপেইন এর জন্য অনেক বেশী অ্যাড আনএপ্রুভ হলে।
  • খুব কম সময়ের মধ্যে ২ বা ততোধিক অ্যাড অ্যাকাউন্ট থেকে কোন একটি পেজের অ্যাড দিলে।
  • একাধিক স্থান থেকে অ্যাড প্রকাশ করা হলে যেখান থেকে সচরাচর অ্যাড অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করা হয়না।
  • অবৈধভাবে ফেসবুক অ্যাড কুপন ব্যবহারের চেষ্টা করলে।

নিষিদ্ধ কন্টেন্ট-

  1. সামাজিক, সাম্প্রদায়িক যেমন ধর্ম,বর্ণ, সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এই ধরনের অ্যাড।
  2. অবৈধ পণ্য ও সেবা। যেমন রেপ্লিকা বা নকল পণ্যের অ্যাড দিলে।
  3. বৈষম্যমূলক আচরণ। অ্যাড এর ভেতর বৈষম্যমূলক কোন কথা লেখা থাকলে বা ছবি প্রকাশ করলে। যেমনঃ সুনির্দিষ্টভাবে কোন দল, সম্প্রদায় কে হেয় করলে, কাউকে হয়রানি করলে, সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে অ্যাড এর প্রতি সাড়া না দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হলে।
  4. সিগারেট এবং বিড়ির অ্যাড।
  5. মাদকদ্রব্য এবং এই সংক্রান্ত সংক্রান্ত অ্যাড।
  6. অনিরাপদ সাপ্লিমেন্টস। যেমন দ্রুত বৃদ্ধির জন্য হরমোন। মোটা তাজাকরন ট্যাবলেট।
  7. আগ্নিয় অস্ত্র, গোলা বারুদ, বিস্ফোরক দ্রব্য।
  8. প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রোডাক্ট, সার্ভিস অথবা কন্টেন্ট।
  9. তৃতীয় পক্ষের কোন কন্টেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করলে যেখানে কপিরাইট, ট্রেডমার্ক, গোপনীয়তার ইস্যু গুলো থাকে এবং প্রচারের অধিকার খর্ব করে।
  10. দুঃখজনক, হিংসাত্মক এবং বিদ্বেষমূলক অ্যাড।
  11. ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, বিশ্বাস, লিঙ্গ, মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে কাউকে কটাক্ষ করা।
  12. মিথ্যা আশ্বাস দেয়া অথবা ভুয়া কোন অফার প্রদান করা।
  13. রাজনৈতিক এবং সামাজিক কোন ইস্যু বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা।
  14. এমন কোন ল্যান্ডিং পেজ ব্যবহার করা যা ঠিকমতো কাজ করে না। খুব ধীর গতিতে লোড হয়। নিম্ন মানের পণ্য ও সেবার অফার দেয়। অন্য জায়গায় ফরওয়ার্ড হয়, যা অ্যাড এর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়।
  15. মোবাইল ফোন ট্রাকার, স্পাই ক্যামেরা এবং গোপনে নজরদারী করে এমন যন্ত্রপাতির অ্যাড।
  16. ভুল বানান, গ্রামার, উচ্চারণ, সঙ্কেত, নম্বর, অক্ষর ইত্যাদি ব্যবহার করলে।
  17. এমন কোন বাটন ব্যবহার করা যার কোন অস্তিত্বই নেই।
  18. পূর্বের এবং বর্তমান অবস্থা জানিয়ে ব্যাক্তিগত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোন ছবি প্রকাশ করে অ্যাড দিলে।
  19. এম, এল, এম মার্কেটিং, এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম এর অ্যাড দিলে।
  20. ভুয়া ডকুমেন্টস প্রদান এর অ্যাড যেমন – ইমিগ্রেশন, সার্টিফিকেট, ভিসা ইত্যাদি।
  21. ফ্ল্যাশ এনিমেশন ও অডিও যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়।
  22. এমন কোন স্ট্রিমিং ডিভাইস এর অ্যাড যা অননুমোদিত ভাবে অরিজিনাল মিডিয়াতে প্রবেশ করে।
  23. নিষিদ্ধ আর্থিক পণ্য ও সেবার অ্যাড। যেমন – ঘরে বসেই আয় করুন।

অনুমোতি স্বাপেক্ষে সেসব কনটেন্ট ব্যবহার করা যায়-

  1. এ্যালকোহল এর অ্যাড। যা প্রচলিত আইন এবং নিয়ম মেনে দেয়া যাবে।
  2. অনুমতি নিয়ে অনলাইন ডেটিং এর অ্যাড।
  3. অনলাইনে জুয়াখেলা, রিয়েল মানি গেম, অনলাইন লটারি, ক্যাসিনো ইত্যাদির অ্যাড অনুমতি নিয়ে দেয়া যাবে।
  4. সরকার অনুমোদিত আঞ্চলিক লটারির অ্যাড অনুমতি নিয়ে দেয়া যাবে।
  5. অনলাইন ফার্মেসি অ্যাড এর জন্য অনুমোদন লাগবে।
  6. গ্রহনযোগ্য ডায়েটেরী পণ্য, হারবাল সাপ্লিমেন্টস অ্যাড এর জন্য টার্গেটেট আডিয়েন্স এর বয়স নুন্যতম ১৮ বছর হতে হবে।
  7. ক্রেডিট কার্ড এর জন্য আবেদন, আর্থিক সার্ভিসসহ আক্রিডিটেট ইন্সটিটিউশনের কর্মকান্ড এবং নিয়ম কানুন পরিষ্কার ভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।
  8. অনুমতি ছাড়া ব্রান্ডেড পণ্যের অ্যাড দেয়া যাবে না। আমরা অনেকেই ব্রান্ডেড পণ্যের ব্যাপারে ভুল বুঝি। এটা জনপ্রিয় কোন ব্রান্ডের এর ব্যাপার না। এই ক্ষেত্রে ব্রান্ডেড প্রোডাক্ট বলতে ৩য় পক্ষের প্রোডাক্ট গুলোর কথা বলা হয়েছে। যে প্রোডাক্ট গুলোতে আপনার মালিকানাসত্ব বা অংশীদারিত্ব নেই।
  9. রাজনৈতিক এবং নির্বাচন সংক্রান্ত অ্যাড দেয়া যাবে। তবে এই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আইন কানুন মেনে চলতে হবে এবং ফেসবুক থেকে অনুমতি নিতে হবে।
  10. ফেসবুক এর অনুমতি ব্যতিত ক্রিপ্টো কারেন্সি এবং এতদ সংক্রান্ত অ্যাড দেয়া যাবে না।
একটা অ্যাড অ্যাকাউন্ট ডিজেবল/রেসট্রিকশন হওয়া মানে হল আপনি ফেসবুকের কুনজরে পড়ে গেলেন যা আপনার পেজের জন্য ভাল না ও হতে পারে তাই চেষ্টা করবেন সব সময় ফেসবুকের কমিউনিটি গাইড লাইন মেনে অ্যাড দেওয়ার।

কন্টেন্ট ক্রেডিটঃ
ডিজিটাল মার্কেটার ও ওয়েব ডেভেলপার

Next Post Previous Post