সুন্দরভাবে সাজানো গোছানো একটা বিজনেস পেজ আপনার সেল বাড়িয়ে দিতে পারে বহুগুন।


বর্তমানে বেশিরভাগ অনলাইন বিজনেসই কেবল ফেসবুক নির্ভর। অনেকে তো ই-কমার্স বিজনেস বলতে শুধু ফেসবুক ভিত্তিক বিজনেস বা এফ-কমার্স কেই মনে করেন। ফেসবুক নির্ভর বিজনেসের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই প্রতিনিয়ত আপনার বিজনেসের প্রতিযোগীতা বাড়তেই আছে। সেকারনে আপনার বিজনেস পেজ টা একটু ভিন্নভাবে না সাজালে আর একটু এফিশিয়েন্ট না করলে আপনি হয়ত প্রতিযোগীতায় অনেক টা পিছিয়ে পড়তে পারেন। ফলে ঘটতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যর্থতা!
মনে রাখবেন বিক্রয় অনেকটা ই নির্ভর করে আপনার বিজনেস পেজের সৌন্দোর্যের উপর।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনার বিজনেস পেজটি আরো আকর্ষনীয় ও বিক্রয় বৃদ্ধির উপযোগী করে তুলবেন।

টিপস নাম্বার – ১- নেম এবং ইউজার নেম সেট করতে হবেঃ

একটা বিজনেস পেজের নাম পছন্দ করা টা সত্যিই খুব কঠিন একটা কাজ। নাম যেমনই হোক না কেন একটু ছোট ও শুনতে ভাল লাগে এমন নাম দেওয়ার চেষ্টা করুন এবং এমন নাম বাছাই করুন যা আপনার বিজনেস এরসাথে প্রাসংগিগ হয়, বিজনেস নাম পছন্দ করার ক্ষেত্রে সব থেকে গুরুত্বপূর্ন বিষয় টি হল, নাম খুব বেশি জনপ্রিয় কোনা বিজেনেস এর নামের কাছাকাছি যেন না হয় এবং অবশ্যই নামের বিপরীতে ডোমেইন নেম টি এভাইলেবল আছে কি না তা চেক করে নিবেন এটা পরে খুবই কাজে দিবে। বিশেষ করে আপনার যদি ওয়েবসাইট না থেকে থাকে এবং যদি বিজনেস টা অন্য লেভেলে নিয়ে যেতে চান তখন।
নেমকেই ইউজার নেম হিসেবে সেট করার চেষ্টা করুন যদি না হয় তাহলে হালকা মডিফাই করে ইউজার নেম সেট করুন। মনে রাখবেন ইউজার নেম ইউনিক হয় এবং এটাই আপনার বিজনেস পেজের আসল আইডেনটিটি। ইউজার নেমটিও ছোট রাখার চেষ্টা করুন। ইউজার নেম আপনার পেজের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ন। এটাই আপনার পেজের ইউ আর এল – এ থাকবে এবং সবার চোখে এটাই ভিজিবল হবে।

টিপস নাম্বার – ২- লোগো ও কভার ফটোঃ

লোগো ও কভার ফটো আপনার পেজের ভিজিটরদের সব থেকে বেশি আকৃষ্ট করে তাই লোগো ও কভার ফটো এমন হওয়া দরকার যেন এটাতে চোখ পড়লেই আপনার বিজনেস সম্পর্কে এবং আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে যে কারো কিছুটা আইডিয়া হয়ে যায়। এবং বোঝা যায় যে আপনি আসলে কি প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছেন অথবা কেমন ধরনের সার্ভিস দিচ্ছেন।
কভার হিসেবে আপনি চাইলে স্লাইডার ইমেজ অথবার একটা ভিডিও বানিয়ে সেট করে দিতে পারেন এতে করে আপনি পেজে একটু ভিন্নতা আসবে, আর হতে পারে এটাই আপনার পেজকে আরো আকর্ষনীয় করে তুলছে।

টিপস নাম্বার – ৩ – সঠিক ক্যাটাগরি নির্বাচন করতে হবেঃ

আপনার বিজনেস পেজ টি কি রিলেটেড তার উপর নির্ভর করে সঠিক ক্যাটাগরি নির্বাচন করুন। বর্তমানে মাল্টিপল ক্যাটাগরি তে ফেসবুক পেজ রাখা যায়।
চেষ্টা করুন আপনার পেজ টির সাথে প্রাসংগিক এমন মাল্টিপল ক্যাটাগরি নির্বাচন করার। ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করেই ফেসবুক আপনাকে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা অফার করে এবং আপনার পেজটি সাজানো সুযোগ দেয় তাই ক্যাটাগরি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভূল করা যাবে না।

টিপস নাম্বার – ৪- ডেসক্রিপশন ও কনটাক্ট ইনফরমেশন সেট করতে হবেঃ

ছোট করে আপনার পেজের সম্পর্কে ডেসক্রিপশনে লিখুন। মনে রাখবেন এটা যেন অনেক সহজ ও আকর্ষনীয় হয় আর এটা পড়লেই যেন সবার আপনার পেজ সম্পর্কে পরিষ্কার একটা ধারনা তৈরি হয়ে যায়। ভিজিটর আপনার পেজে ভিজিট করলে এটা দেখতে পায়।
কনটাক্ট ইনফরমেশন এ যা যা থাকা দরকারঃ
  • আপনার একটিভ মোবাইল নাম্বার টা দিন যেটা তে যে কেউ আপনাকে করল করলেই যেন সাথে সাথেই পেয়ে যায়।
  • আপনার বিজনেস মেইল টি দিন যেখানে আপনার কাস্টমাররা মেইল করলেই যেন যেকোন সাপোর্ট পায়।
  • আপনার ওয়েবসাইট লিংক টি দিন যেখান থেকে কাস্টমার আপনার বিজনেস , সার্ভিস অথাবা প্রোডাক্ট সম্পর্কে আরো বেশি জানতে পারে।
  • ওয়েবসাইট গুরুত্বপূর্ন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ন কারন এটা অনলাইনে আপনার একটা ভিন্ন রকম আইডেনটিটি তৈরি করে আর আপনার বিজনেস কে আরো বেশি বিশ্বস্ত্ব করে তোলে।
  • এরপর আপনার সঠিক এড্রেস টি দিন এটাও আপনাকে অনেক বেশি বিশ্বস্ত্ব করে তুলবে অনলাইন জগতে।
  • পারলে আপনার বিজনেস হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার টাও দিন।
  • পেইজে সেন্ড মেসেজ একশন বাটন এড করুন।
এখানে আপনি আরো কিছু জিনিস সেট করে দিতে পারেন এবং এটা করলে আরো বেশি ভাল হবে যেমন আপনার বিজনেসের ওপেনিং আওয়ার , প্রাইস রেঞ্জ, সার্ভিস এরিয়া , প্রাইভেসি–পলিসি লিংক ইত্যাদি এগুলো সেট করলে আপনি ফেসবুকের কাছে আরো বেশি গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠবেন।

টিপস নাম্বার- ৫ – পেজের প্রোয়োজন অনুযায়ী সঠিক টেমপ্লেট ও ট্যাব নির্বাচন করুনঃ

টেমপ্লেট ও ট্যাবস আপনার পেজের প্রয়োজন অনুযায়ী আপনাকে আরো বেশি কাস্টমাইজ করার সুযোগ দেয় যাতে আপনি আরো বেশি সুন্দর করে আপনার সার্ভিস বা প্রোডাক্ট কাস্টমারের কাছে উপস্থাপন করতে পারেন।
আপনি যদি কোন প্রোডাক্ট সেল করতে চান তাহলে “Shopping” নির্বাচন করুন, সার্ভিস প্রোভাইড করতে চাইলে “Services”, সাধারন কোন বিজনেস হলে “Business” নির্বাচন করুন অথবা প্রোয়োজন অনুযায়ী অন্য কিছু ও নির্বাচন করতে পারেন
ডিফল্টভাবে “Standard” সিলেক্ট করা থাকে। এটা সাধারনত সব রকম বিজনেস পেজেই ব্যবহার করা যায়।

টিপস নাম্বার – ৬ – কমার্স ম্যানেজার ব্যাবহার করুন।

আপনি যদি ফেসবুকে পেজের মাধ্যমে কোন প্রডাক্ট সেল করতে চান তাহলে আমি হাইলি রিকমেন্ড করবো অবশ্যই কমার্স ম্যানেজার ফিচার টি ইউজ করুন। এটা আপনাকে আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজ টা আরো আকর্ষনীয় করতে সাহায্য করবে। আর আপনার যদি ই-কমার্স ওয়েব সাইট থেকে থাকে তাহলে এটা আপনাকে অনেক বেশি শুবিধা দিবে আপনার ওয়েব সাইটের প্রোডাক্ট ফেসবুকে খুব সহজেই দেখানোর সুযোগ তৈরি করে দিবে।
কমার্স ম্যানেজার কে আপনি ফেসবুক পেজের মধ্যে আরেকটা ইকমার্স ওয়েবসাইট হিসেবে মনে করতে পারেন।

টিপস নাম্বার - ৭ – মেসজিং অপশন টা কাস্টোমাইজড করুনঃ

আপনার পেজের ভিজিটর দের আরো একটু সহজ করে দিন যাতে করে তারা আরো সহজে আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এ কাজ টি আপনি করতে পারেন আপনার মেসেজিং অপশন টা কাষ্টমাইজড করে।
  1. আপনি কাষ্টম ওয়েলকাম মেসেজ সেট করে দিয়ে রাখতে পারেন, যাতে করে কেউ আপনার পেজে ভিজিট করলেই তার চোখে পড়ে।
  2. আপনি কাষ্টমন এওয়ে মেসেজ সেট করে রাখতে পারেন যাতে করে আপনি অনলাইনে না থেকলেও ভিজিটর আপনার সম্পর্কে কিছু জানতে পারে।
  3. কাষ্টম অটোমেটেড রেসপন্স সেট করে দিতে পারেন, যাতে তারা খুব সহজেই রেসপন্স পেতে পারে।
  4. এবং কিছু ফ্রিকুয়েন্টলি আসক কোশ্চেন ও এগুলো উত্তর গুলো সেট করে রাখতে পারেন।
ফ্রিকুয়েন্টলি আসকড কোশ্চেন আপনার বিজনেস পেজের জন্য খুবই উপকারী একটা অপশন এটা সেট করে দিতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সব শেষে একটা কথাই বলতে চাই ফেসবুকে বিজনেস করতে গেলে পেজের একটিভিটিস বাড়াতে হবে , পেজ কে সতেজ ও সাবলিল রাখতে হবে নিয়মিত গুরুত্বপূর্ন এংগেজমেন্ট বাড়াতে পারে এমন পোস্ট, ইমেজ অথবা ভিডিও পাবলিশড করতে হবে তাহলে আপনার বিজনেস সফল হওয়ার চান্স অনেক বেশি থাকবে।
“হতাস হবেন না, ধৈর্যধরে লেগে থাকুন , ভূল গুলো খুজে বের করুন , এক্সপার্টদের পরামর্শ নিন, সফলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ”
কন্টেন্ট ক্রেডিটঃ
ডিজিটাল মার্কেটার ও ওয়েব ডেভেলপার

Next Post Previous Post